ব্রেকিং:
রাণীনগরে বিদ্যুতায়িত হয়ে ভ্যানচালকের মৃত্যু রাণীনগরে প্রশিকার গাছ বিতরণ পত্নীতলায় শিক্ষার্থীদের নামে চাঁদাবাজি, যুবক আটক নওগাঁয় সপ্তাহের ব্যবধানে ধানের দাম কমেছে মনে ১০০ টাকা নিয়ামতপুরে খাল খননে ভাগ্য বদলে দিয়েছে কৃষকের রাণীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় নারীর মৃত্যু

শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১   ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নওগাঁ দর্পন
সর্বশেষ:
রাণীনগরে বিদ্যুতায়িত হয়ে ভ্যানচালকের মৃত্যু রাণীনগরে প্রশিকার গাছ বিতরণ পত্নীতলায় শিক্ষার্থীদের নামে চাঁদাবাজি, যুবক আটক নওগাঁয় সপ্তাহের ব্যবধানে ধানের দাম কমেছে মনে ১০০ টাকা নিয়ামতপুরে খাল খননে ভাগ্য বদলে দিয়েছে কৃষকের রাণীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় নারীর মৃত্যু
৮৯

শিল্পকারখানায় সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা অব্যাহত রাখা হবে

প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট ২০২৪  

সেনাবাহিনী প্রধান ও ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে এই সভায় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান দেশের অর্থনীতিতে ব্যবসায়িক সমাজের গুরুত্ব ও অবদানের কথা উল্লেখ করেন। দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তা বিধানে সেনাবাহিনীর ভূমিকা তুলে ধরেন। এ ছাড়া শিল্পকারখানা চালু রাখার ব্যাপারে সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করেন সেনাপ্রধান। 
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সভায় সেনাসদর ও গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

বৈঠকে ব্যবসায়ী নেতাদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসিবি) সভাপতি মাহবুবুর রহমান, এফবিসিসিআইর সভাপতি মাহবুবুল আলম, সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু ও মীর নাসির হোসেন, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি ও সার্ক চেম্বারের সভাপতি জসিম উদ্দিন, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি ও আইসিসিবির সহসভাপতি এ. কে. আজাদ, এমসিসিআইর সাবেক সভাপতি তপন চৌধুরী, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ, বিজিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, আইসিসিবির সহসভাপতি নাসের এজাজ বিজয়।
ব্যবসায়িক নেতাদের পক্ষে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে সেনাবাহিনীর সময়োচিত ভূমিকা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পকারখানায় উৎপাদন অক্ষুণ্ন রাখাসহ আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করায় সেনাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ ছাড়া তিনি ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, শিল্পকারখানার নিরাপত্তা প্রদান, বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন, অর্থনৈতিক গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মালিক-শ্রমিক সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠতর করা, আমদানি-রপ্তানিসহ নিরবচ্ছিন্ন পণ্য সরবরাহ ও সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট নিশ্চিতকরণ, সব বন্দর ও ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সব মহাসড়কের নিরাপত্তা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোকপাত করেন। সেই সঙ্গে তিনি শিল্পকারখানা ও মহাসড়কে চাঁদাবাজি রোধ, সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ও ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা-সংক্রান্ত ঝুঁকিসমূহ নিরসনের ব্যবস্থা, অগ্নিসংযোগের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া কলকারখানা পুনরায় চালু এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কর্মীদের নিরাপত্তার গুরুত্ব তুলে ধরেন। 

 

এ সময় সভায় উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতারা একটি উন্মুক্ত পরিবেশে তাদের মতামত ও পরামর্শ উপস্থাপন করেন। পরে সেনাবাহিনী প্রধান ব্যবসায়ী নেতাদের শিল্পকারখানা ও শিল্পাঞ্চলগুলোয় নিরাপত্তা প্রদান, চাঁদাবাজি বন্ধ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জনসহ বিবিধ কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনী পাশে থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন।
দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে শিল্পাঞ্চলগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ৯ আগস্ট সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে শিল্পাঞ্চল নিরাপত্তা  সেল গঠন করা হয়। এ সেলের তত্ত্বাবধানে শিল্প পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সহায়তায়  দ্রুত সাময়িক বন্ধ থাকা কারখানাগুলো পুনরায় চালু হয় এবং আস্থা ও নিরাপদ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। শিল্পাঞ্চলগুলোর নিরাপত্তাকল্পে এবং দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

পরে সমকালের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, কারখানার নিরাপত্তায় সেনাসদস্য ও পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ বাহিনী গঠন করলে তা ফলপ্রসূ হবে। আইসিসিবি সভাপতি মাহবুবুর রহমান সমকালকে বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে সেনাপ্রধানের সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়েছে। বৈঠকটি কার্যকর ও ফলপ্রসূ হয়েছে।
এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম সমকালকে বলেন, সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনায় ক্রেতাদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দ্রুত ক্রেতাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। সে জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি করতে হবে। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানা চালুর ব্যবস্থা করতে হবে। এসব বিষয় বৈঠকে তুলে ধরা হয়েছে।  
তিনি আরও বলেন, বন্দর ও মহাসড়কের নিরাপত্তা বাড়ানো এবং চাঁদাবাজমুক্ত করতে সেনাবাহিনীকে অনুরোধ করা হয়। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ বাজারে নির্বিঘ্নে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

সার্ক চেম্বারের সভাপতি জসিম উদ্দিন সমকালকে বলেন, কারখানাগুলোতে নতুন করে ঝুটের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও চাঁদাবাজদের উৎপাত বাড়ছে। এ ছাড়া শিল্প পুলিশকে অনেকে এখন পরোয়া করে না। তাই সেনাবাহিনী ও পুলিশ মিলে যৌথ বাহিনী গঠন করে কারখানাগুলোতে যেন পাহারা বসানো হয়, সেই অনুরোধ করা হয়েছে সেনাপ্রধানের কাছে। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনার কারণে কয়েক দিন কারখানা বন্ধ ছিল। উৎপাদন ও রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। অনেক কারখানা মালিক শ্রমিকদের বেতন দিতে সমস্যায় পড়েছেন। এসব বিষয়ও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। 
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ সমকালকে বলেন, মূলত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা কারখানার নিরাপত্তার জন্য শিল্প পুলিশকে সহযোগিতা করছেন। ব্যবসায়ীরা সেনাপ্রধানকে এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অনুরোধ করেছেন। 

বৈঠকে উপস্থিত একজন ব্যবসায়ী নেতা জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েই বেশি আলোচনা হয়েছে। শিল্পকারখানার নিরাপত্তায় যতদিন প্রয়োজন, সেনাসদস্যদের ততদিন শিল্প পুলিশকে সহযোগিতার জন্য ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেনাপ্রধান ব্যবসায়ীদের বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং উপস্থিত কর্মকর্তাদের বিভিন্ন ইস্যুতে নির্দেশনা দেন। 
বৈঠকের বিষয়ে এফবিসিসিআইর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং শিল্পকারখানার উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা সচল রাখতে শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা জোরদার করাসহ চাঁদাবাজি রোধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। শিল্পের নিরাপত্তা ইস্যুতে শিল্প এলাকাগুলোয় বিভিন্ন কার্যক্রম ও টহল পরিচালনা করায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশের সব নাগরিকের পাশাপাশি ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন বলে ব্যবসায়ী নেতাদের আশ্বস্ত করেন সেনাপ্রধান। তিনি জানান, শিল্পপ্রতিষ্ঠান, সাপ্লাই চেইন, বন্দরের নিরাপত্তা প্রদানসহ দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যাতে নির্বিঘ্নে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন, সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা তৎপর। কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান কোনো ধরনের হুমকির শিকার হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান সেনাপ্রধান। 

নওগাঁ দর্পন
এই বিভাগের আরো খবর