ব্রেকিং:
রাণীনগরে বিদ্যুতায়িত হয়ে ভ্যানচালকের মৃত্যু রাণীনগরে প্রশিকার গাছ বিতরণ পত্নীতলায় শিক্ষার্থীদের নামে চাঁদাবাজি, যুবক আটক নওগাঁয় সপ্তাহের ব্যবধানে ধানের দাম কমেছে মনে ১০০ টাকা নিয়ামতপুরে খাল খননে ভাগ্য বদলে দিয়েছে কৃষকের রাণীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় নারীর মৃত্যু

মঙ্গলবার   ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আশ্বিন ১ ১৪৩১   ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

নওগাঁ দর্পন
সর্বশেষ:
রাণীনগরে বিদ্যুতায়িত হয়ে ভ্যানচালকের মৃত্যু রাণীনগরে প্রশিকার গাছ বিতরণ পত্নীতলায় শিক্ষার্থীদের নামে চাঁদাবাজি, যুবক আটক নওগাঁয় সপ্তাহের ব্যবধানে ধানের দাম কমেছে মনে ১০০ টাকা নিয়ামতপুরে খাল খননে ভাগ্য বদলে দিয়েছে কৃষকের রাণীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় নারীর মৃত্যু
২০৮

অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র করবে সরকার

প্রকাশিত: ২২ আগস্ট ২০২৪  

দেশে বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন করবে সরকার। এজন্য বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষণা সংস্থা সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন। 

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়– প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, প্রায় দেড় দশক ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতি বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জে নিপতিত রয়েছে। বিগত সরকারের চরম অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, অর্থ পাচার এবং অপরিণামদর্শী প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি ঋণ গ্রহণ ইত্যাদি কার্যক্রমের কারণে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়ে।

এতে বলা হয়, অর্থ বিভাগ সূত্রে গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে, পতনকালে শেখ হাসিনার সরকার ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ রেখে গেছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের যে স্থিতি ছিল, তা বাংলাদেশের তিনটি বাজেটের মোট অর্থ বরাদ্দের সমান। অন্যদিকে বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে কর আদায়ের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির চেষ্টা না করে দেশি-বিদেশি দুই ধরনের ঋণের প্রতি বিগত সরকার ঝুঁকে ছিল। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় জিডিপির তুলনায় কর সংগ্রহকে ১৪ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও গত ছয়-সাত বছরে এ অনুপাত ১১ শতাংশ থেকে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার এটি একটি দিক মাত্র। সামগ্রিকভাবে দুর্নীতি, অর্থ পাচারের অবাধ সুযোগ, বাজার সিন্ডিকেট ইত্যাদির ফলে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা অসহনীয় হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, গত জুলাই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল প্রায় ১২ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরও বেশি, তা ১৪ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। বলা যেতে পারে, বিগত সরকারের শেষ সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকটাই মুখ থুবড়ে পড়ে।

এতে আরও বলা হয়, বিগত সরকারের সার্বিক অব্যবস্থাপনার ফলে সৃষ্ট দেশের অর্থনীতির নজিরবিহীন নাজুক পরিস্থিতিতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে সুসংহতকরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তার মধ্যে প্রধানতম হলো– অর্থনীতি পুনরায় সচল করার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে যেসব সমস্যা রয়েছে, সেগুলো নিরসনে কাঠামোগত সংস্কার সাধন; নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি; দুর্নীতি দূরীকরণ; ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা; কর ও শুল্ক নীতির সংস্কার; বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ ইত্যাদি। 

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণকালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার একটি সামগ্রিক চিত্র এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার শুরুতেই সরকারের হাতে থাকা প্রয়োজন। তাই দেশের অর্থনীতির ওপর একটি শ্বেতপত্র প্রস্তুত করা হবে। এতে দেশের বিদ্যমান অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র থাকার পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিষয়ে সরকারের কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণ, এসডিজি বাস্তবায়ন এবং এলডিসি থেকে উত্তরণে করণীয় বিষয়ে প্রতিফলন থাকবে। শ্বেতপত্রটি প্রণয়নকালে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও মতবিনিময় করা হবে।

প্রস্তাবনা অনুযায়ী, শ্বেতপত্রে প্রধানত যেসব বিষয় নিয়ে আলোকপাত করা হবে, সেগুলো হচ্ছে– সরকারি অর্থায়ন ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ সম্পদ, সরকারি বিনিয়োগ, বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্প, ভর্তুকি, ঋণসহ সরকারি ব্যয় এবং বাজেট ঘাটতির তথ্য উপস্থাপন করা হবে। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য ব্যবস্থাপনার আওতায় পণ্যের উৎপাদন, সরকারি ক্রয়, সরকারি খাদ্য বিতরণ, বহিঃস্থিতির ক্ষেত্রে আমদানি-রপ্তানি, রেমিট্যান্স, বিদেশি বিনিয়োগ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, বৈদেশিক অর্থায়ন প্রবাহ এবং ঋণের বিষয় থাকবে। জ্বালানি ও বিদ্যুতের চাহিদা, সরবরাহ, মূল্য, ক্রয় চুক্তি ও ব্যয়, বেসরকারি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঋণপ্রাপ্তি, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ ও লজিস্টিকস, দেশে-বিদেশি কর্মসংস্থানের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানিক ও অপ্রতিষ্ঠানিক এবং কর্মসংস্থানের বিষয়ও এতে উল্লেখ থাকবে।

শ্বেতপত্রটি প্রস্তুতের জন্য কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শক্রমে কমিটির প্রয়োজনীয়সংখ্যক সদস্যকে মনোনীত করবেন। কমিটির রূপরেখার ক্ষেত্রে প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়, কমিটির সদস্যরা অবৈতনিকভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। পরিকল্পনা কমিশন কমপ্লেক্সের যথোপযুক্ত কোনো ভবনকে কমিটির দপ্তর হিসেবে বিবেচনা করা হবে। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবে। সরকারের সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, সংস্থা প্রস্তাবিত কমিটির চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত সরবরাহসহ সব ধরনের সহযোগিতা করবে। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি ৯০ দিনের মধ্যে সুপারিশ-সংবলিত প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবে।

নওগাঁ দর্পন
এই বিভাগের আরো খবর